সুনামগঞ্জে ধান গোলায় তোলার আগেই সুদখোরেরা খলায় গিয়ে হাজির

প্রকাশিত: ৫:৫৫ অপরাহ্ণ, জুন ৭, ২০২০
591 Views

অনলাইন ডেক্স : সুনামগঞ্জ জেলা’সহ হাওরাঞ্চলে ধান কাটা শেষ হয়েছে। বাম্পার ফলন আর ধানের পর্যাপ্ত দামের কারনে গ্রামাঞ্চলে কৃষকের স্বস্থির নিঃশ্বাস নিবার আগেই শুরু হয়েছে সুদখোরদের অত্যাচার।

সুনামগঞ্জ জেলার তাহিরপুর, জামালগঞ্জ, দিরাই, শাল্লাসহ বিভিন্ন এলাকায় কৃষকেরা সুদে টাকা গৃহস্থালি কাজে ব্যয় করেছিলো। সাধারণত বৈশাখ উঠার পরেই সুদের টাকাসহ আসল দেবার কথা বলেই কৃষকেরা সুদখোরদের কাছ থেকে বিভিন্ন হারে টাকা এনে থাকে।

ধান গোলায় তোলার আগেই অনেক জায়গায় সুদখোরেরা খলায় গিয়ে হাজির হয় এবং কাবুলিওয়ালাদের মতোই গৃহস্থের খলা থেকে ধান নিয়ে আসে। অনেক খলায় ধান বিক্রি করে সুদের টাকা ফিরত নিয়ে আসে। কেউ কেউ লোক পাঠিয়ে টাকা আদায়ের জন্যে পরোয়ানা জারির মতো আলটিমেটাম দেয়। টাকা না দিলে উপজেলা সদরে, জেলা সদরে বা নিকটবর্তী বাজারে আসতে দিবে না বলে হুমকী দিচ্ছে।

রাস্তাঘাটে আটক করে সুদের টাকা আদায় করারও প্রকাশ্যে হুমকি দিচ্ছে। জামালগঞ্জ উপজেলার নয়মৌজা এলাকার গৃহস্থরা সবচেয়ে বেশী হুমকির মুখে আছেন। তারা ঘর হতে বের হলেই সুদখোরদের আটকের সম্মুখীন হচ্ছেন। সুদের এই বেপরোয়া লাভের আশায় অনেক সরকারি বেসরকারি চাকরীজীবিরাও সুদে টাকা বিনিয়োগ করে রাতারাতি বড়লোক হওয়ার চেষ্টায় বেআইনী প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হয়েছেন।

অনেক সুদখোরদের সাথে স্থানীয় পুলিশদের সুসম্পর্ক থাকার কারনে কৃষকদের নির্যাতনের ঘটনায় পুলিশ কিছু শুনেও না শুনার ভান করে। যদিও বেসরকারি ব্যাংকিং বা সুদের ব্যবসা রাষ্টীয় আইনে সম্পুর্ন বেআইনী তবুও পুলিশ এ ব্যাপারে তাদের করনীয় নাই বলে নির্যাতন বা অন্যায় আটকের হুমকি দাতাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে এড়িয়ে যেতে চায়।

দেশের কোনও নাগরিককে অন্যায়ভাবে আটক বা আটকের হুমকি বা চলাচলে বাধা প্রদান, ফৌজদারি কার্যবিধি অনুযায়ী সুস্পষ্ট অপরাধ। এমনকি বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে নির্দেশনা আছে গ্রামীণ সুদখোর বা লগ্নিকারীদের তালিকা করে আইনী পদক্ষেপ নেয়ার জন্যে।

সুনামগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান বিপিএম বলেন,সুদখোর ও দাদন ব্যবসায়ীরা সমাজের বড় শত্রু কিন্তু সমস্যা হচ্ছে এসব শত্রুদের বিরুদ্ধে থানা পুলিশ পর্যন্ত কোন ভূক্তভোগী বা ফরিয়াদি অভিযোগ দায়ের করেনা কিন্তু সুনামগঞ্জ পুলিশ সুদখোর ও দাদন ব্যবসায়ী সে যেই হউক তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

তিনি বলেন, জেলা প্রশাসন চাইলে প্রত্যেক উপজেলা নির্বাহী অফিসার,জনপ্রতিনিধি,খাদ্য ও কৃষি বিভাগের সহায়তায় সুদখোর ও দাদন ব্যবসায়ীদের তালিকা প্রস্তুত করে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারে।

সূত্র: amadersomoy.com